পৃথিবীর জন্য ভয়াবহ দুঃসংবাদ!
নাটকীয়ভাবে গলে যেতে শুরু করেছে দক্ষিণ মেরুর সাগরে ভাসমান বরফস্তর লারসেন বি আইস শেলফ। আর এভাবে যদি দ্রুত গলতে থাকে তাহলে পৃথিবীর জন্য এটি হচ্ছে একটি ভয়াবহ দুঃসংবাদ।
১০ হাজার বছরের পুরনো এই বরফস্তর ২০২০ সালের মধ্যেই পুরোপুরি বিলীন হয়ে যেতে পারে।নতুন এক গবেষণার বরাত দিয়ে এই শঙ্কার কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা।
নাসার গবেষকরা জানান, এক সময়কার সবচেয়ে বড় ও স্থূল ভাসমান বরফস্তর লারসেন বি আইস শেলফ চলতি দশক শেষ হওয়ার আগেই হারিয়ে যেতে পারে। সাগরে ভাসমান বরফস্তর হলো মেরুর বরফের সুরক্ষাকারী দেয়াল হিসেবে কাজ করে। এই স্তর হারিয়ে যাওয়ায় মেরুর বরফ গলে যাওয়ার হার বাড়ার শঙ্কা তৈরি হয়। এই কারণে সমুদ্রের পানির বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। দক্ষিণ মেরুর লারসেন বি আইস সেলফ ২০২০ সালের মধ্যে বিলীন হয়ে গেলে এসব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের পাসাডিনার নাসা জেট প্রপালসন ল্যাবরেটরির আলা খাজেনদারের নেতৃত্বে একদল গবেষক দক্ষিণ মেরুর ভাসমান বরফস্তরের বিলীন হওয়ার হার নিয়ে গবেষণা চালান। চলতি বছরের গ্রীষ্মে দক্ষিণ মেরুর সাগরের বরফস্তরের ভাঙন নিয়ে গবেষণা করা হয়। ছয় সপ্তাহ ধরে টানা বরফস্তর বিলীন হওয়ার বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করেন গবেষকরা।
গবেষণায় দেখা গেছে, ভাসমান বরফ স্তর দ্রুত ভেসে চলছে এবং বরফের মধ্যে স্তরের পরিমাণ বেড়েছে। এসব কারণে ভাসমান বরফস্তর ভেঙে যাওয়ার হার বেড়ে গেছে।
গবেষক আলা খাজেনদার বলেন, ভাসমান বিশাল বরফস্তরের ভেঙে যাওয়ার একদম কাছ থেকে দেখা বিষয়টি বিস্ময়কর। তবে পৃথিবীর জলবায়ুর জন্য এটি অশনিসংকেত। লারসেন বি আইস শেলফ ১০ হাজারের বেশি সময় ধরে টিকে আছে।
২০০২ সালে বড় একটি অংশ বিলীন হওয়ার পর গবেষকদের নজরে আসে লারসেন বি আইস শেলফ। হাজার মাইল দীর্ঘ বরফস্তর দ্রুত হারিয়ে যাওয়ার বিষয়টি পৃথিবীতে খুবই বিরল ঘটনা।
গবেষকরা বলেন, লারসেন বি আইস শেলফ দ্রুত হারিয়ে যাওয়ার মূল কারণ সর্বশেষ কয়েক বছর ধরে মেরু অঞ্চলের উষ্ণ গ্রীষ্মকাল। ওই সময় উত্তরে চলে শীতকাল। কয়েক দশকের মধ্যে উষ্ণতম গ্রীষ্ম দেখা যায় ২০০২ সালে।
গবেষকরা বলেন, ১৯৯৫ সালে লাসে লারসেন বি আইস শেলফ ছিল চার হাজার ৪৪৫ বর্গমাইল বিস্তৃত। ২০০২ সালের ফেব্রুয়ারিতে এটি কমে হয় দুই হাজার ৫৭৩ বর্গমাইল। তবে ওই বছরের গ্রীষ্মে ভাসমান বরফস্তরটিতে নাটকীয় হারে ভাঙন দেখা যায়। মাত্র কয়েক মাস পর বরফস্তরটির বিস্তৃতি দাঁড়ায় মাত্র এক হাজার ৩৩৭ বর্গমাইল। বর্তমানের লারসেন বি আইস শেলফের বিস্তৃতি মাত্র ৬১৮ মাইল। গবেষক খাজেনদার বলেন, বরফস্তরের পরিবর্তনের দ্রুততার বিষয়টি বিস্ময়কর।
প্রতিক্ষণ/এডি/নির্ঝর